পিতামাতার ভরণপোষণ ও একসঙ্গে বসবাস সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক

সংসদে বিলপিতামাতার ভরণপোষণ ও একসঙ্গে বসবাস সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক নিজস্ব প্রতিবেদক
সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতার ভরণপোষণ ও তাঁদের সঙ্গে বসবাস বাধ্যতামূলক করার বিধান করে 'পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১১' নামে একটি বিল গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বেসরকারি এ বিলে সন্তান পিতা-মাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন না করলে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধানের কথা বলা হয়েছে। সন্তানের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে বা নিকটাত্মীয় এ দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে তাঁরাও একই রকম অপরাধী বলে গণ্য হবেন। প্রস্তাবিত বিলে বাবার অবর্তমানে দাদা-দাদি ও মায়ের অবর্তমানে নানা-নানিরও ভরণপোষণ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছে।বেসরকারি দিবসে সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক।বিলে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো পিতা-মাতার একাধিক সন্তান থাকলে সে ক্ষেত্রে সন্তানরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ভরণপোষণ নিশ্চিত করবে। প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতা নিয়ে একসঙ্গে বসবাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সন্তান তার পিতা-মাতা বা উভয়কে তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো বৃদ্ধ নিবাস কিংবা অন্য কোথাও একসঙ্গে কিংবা আলাদাভাবে বসবাস করতে বাধ্য করতে পারবে না। এতে আরো বলা হয়েছে, সন্তান তার পিতা-মাতার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও পরিচর্যা করবে। পিতা-মাতা সন্তান থেকে আলাদা থাকলে সন্তানকে তার আয়ের কমপক্ষে ১০ শতাংশ তাঁদের নিয়মিত দিতে হবে। বিলে অপরাধের আমল যোগ্যতা, বিচার ও জামিন-সংক্রান্ত বিধানে বলা হয়েছে_এ ধরনের অপরাধ প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে বিচারযোগ্য হবে। কোনো আদালত এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ সংশ্লিষ্ট সন্তানের পিতা বা মাতার লিখিত অভিযোগ ছাড়া আমলে নেবে না। অভিযোগকারী পিতা বা মাতাকে শুনানির সুযোগ না দিয়ে কোনো আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেবে না। বিলে আপস-নিষ্পত্তির ধারাও সংযুক্ত করা হয়েছে।বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। সবাই নিজের মতো করে আলাদা বাস করতে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। যৌথ পরিবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অসহায় ও সহায়-সম্বলহীন বয়োবৃদ্ধ বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানির প্রতি সন্তানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ করে দেওয়ার সময় এসেছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক দায়িত্ববোধ ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি এবং আইনি কাঠামো বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।বিলটি উত্থাপনের পর তা আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে সংসদে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত, প্রস্তাব ও বেসরকারি সদস্যদের বিল সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
http://www.kalerkantho.com/print_edition/?view=details&archiev=yes&arch_date=04-02-2011&type=gold&data=news&pub_no=421&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=5#.VjncFZP0o4k
Share on Google Plus

About Advocate REAGAN

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment